আপনি কি আপনার জমির মালিকানা তথ্য বের করতে চাচ্ছেন? জমি কার নামে রেকর্ড রয়েছে সেটি দেখতে চাচ্ছেন? তাহলে খুব সহজে অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই করে নিতে পারবেন। অনলাইনে সকল ধরনের পর্চা রেকর্ড যাচাই করা খুবই সহজ।
বর্তমান সময়ে যেহেতু অনলাইন যুগ আর এই অনলাইন যুগের সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে হচ্ছে আপনি যদি ভূমি অফিসে গিয়ে একটি জমির রেকর্ড যাচাই করতে চান তাহলে আপনার ১০০-২০০ টাকা খরচ করে হয়তো এর থেকেও বেশি খরচ হতে পারে জমির রেকর্ড দেখার জন্য। আর এই কাজটি আপনি ঘরে বসে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনের মাধ্যমেই করে ফেলতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম
তাই আপনি যদি আপনার জমির মালিকানা বের করার উপায় বা জমির রেকর্ড যাচাই বাংলাদেশ করতে চান তাহলে আজকের এই নিবন্ধন থেকে জেনে নিতে পারবেন কিভাবে আপনার নামে রেকর্ডকৃত জমি যাচাই করবেন এবং জমি কার নামে রেকর্ড হয়েছে সেটিও দেখতে পারবেন। অনলাইনে জমির খতিয়ান বা রেকর্ড বের করার উপায় সম্পর্কে দেখে নেই।

অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই করার নিয়ম 2023
জমির রেকর্ড যাচাই করার জন্য ভিজিট করুন: https://eporcha.gov.bd/ এখানে মেনু থেকে “খতিয়ান” অপশনটি সিলেক্ট করুন। পরবর্তী পেইজে খতিয়ানের ধরন বাছাই করে বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও মৌজা এবং জমির দাগ নাম্বার টি উল্লেখ করুন। সবশেষে (অনুসন্ধান) বাটনে ক্লিক করলেই নাম সহ জমির রেকর্ড যাচাই করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ জমির মালিকানা বের করার উপায়
শুধুমাত্র দাগ নম্বর নয় খতিয়ান নম্বর, মালিকের নাম, পিতা/স্বামীর নাম দিয়েও জমির রেকর্ড যাচাই করা যায়। জমির রেকর্ড যাচাই বলতে বোঝায় জমির আসল মালিক কে বা কার নামে জমি রয়েছে কতটুকু অংশে রয়েছে সে বিষয়টিকেই মূলত জমির রেকর্ড বলা হয়।
একটি জমি ক্রয় করার পরে সেটি আপনার নামে যখন রেকর্ড হবে এবং সেটি অনলাইন হলেই শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে রেকর্ড যাচাই করতে পারবেন অন্যথায় অফলাইনে যাচাই করতে হবে অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই করার জন্য কয়েকটি স্টেপ ফলো করুন সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
ধাপ ১: ভূমি মন্ত্রণালয় ওয়েবসাইট eporcha লিখে সার্চ করুন
অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই করার জন্য বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://eporcha.gov.bd/ লিখে সার্চ করলে নিচে দেওয়া ফটোর মতন একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন এবং ই-পর্চা অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
ধাপ ২: “খতিয়ান” অপশন সিলেক্ট করুন
eporcha অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যাওয়ার পরে নতুন একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন। এখানে একটু নিচের দিকে গেলে একটি মেনু দেখতে পাবেন সেখান থেকে (খতিয়ান) অপশন সিলেক্ট করুন। যেমনটি নিচের ফটোতে দেখতে পাচ্ছেন।
ধাপ ৩: খতিয়ান নং দিয়ে রেকর্ড যাচাই
এই স্টেপে আপনার জমির রেকর্ড যাচাই করার জন্য সকল তথ্য দিতে হবে প্রথমে বিভাগ ও জেলা নির্বাচন করুন খতিয়ান টাইপ নির্বাচন করুন। মোট আট ধরনের খতিয়ান প্রচারিত রয়েছে আপনি যে জমি যাচাই করতে চাচ্ছেন বা যেই খতিয়ান যাচাই করতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করুন।
- বি এস খতিয়ান
- সি এস খতিয়ান
- বি আর এস খতিয়ান
- আর এস খতিয়ান
- এস এ খতিয়ান
- পেটি খতিয়ান
- দিয়ারা খতিয়ান
- নামজারি খতিয়ান
আরো পড়ুনঃ জমির দাগ নম্বর থেকে খতিয়ানটি বের করুন
উপরের খতিয়ান টাইপ গুলোর মধ্যে আপনি যেই খতিয়ানের জায়গার তথ্য দেখতে চাচ্ছেন বা কার নামে রয়েছে সেটি দেখতে যাচ্ছেন সেই খতিয়ান টাইপ সিলেক্ট করুন বেশিরভাগ আরএস খতিয়ান হয়ে থাকে তাই আমরা বি এস খতিয়ান সিলেক্ট করে কিভাবে চেক করব সেটি দেখব।
খতিয়ান (বি এস) সিলেট করে উপজেলা ও আপনি যেই মৌজার জায়গা বা খতিয়ান দেখতে চাচ্ছেন সেই মৌজা নির্বাচন করুন। এবং খতিয়ান নম্বর লিখে নিচে একটি ক্যাপচার বক্স দেখতে পাবেন সেখানে চারটি সংখ্যা লেখা দেখতে পাবেন সেই লেখাগুলো খালি বক্সে বসিয়ে (অনুসন্ধান করুন) বাটনে ক্লিক করলেই নতুন একটি ইন্টারফেজে নিয়ে যাবে।
ধাপ ৪: জমির সার্টিফাইড রেকর্ড যাচাই করুন
এখানে আপনি যে খতিয়ান নং ব্যবহার করেছেন এবং সেই খতিয়ান নং অনুযায়ী আপনার খতিয়ান নাম্বার কত সেটি এবং জমির মালিক ও দখলদারকে সেটিও দেখতে পারবেন যেমনটি নিজের ফটোতে দেখানো হয়েছে। এবার সার্টিফাইড কপি দেখার জন্য আবেদন করুন।
সার্টিফাইড কপি আবেদন করার জন্য নিচে (আবেদন করুন) বাটনে ক্লিক করুন
ধাপ ৫: সার্টিফাইড কপির ফি প্রদান করুন
অনলাইন থেকে সার্টিফাইড কপি ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হবে। তবে আপনি যদি আরএস খতিয়ান রেকর্ড যাচাই করতে চান তাহলে আপনি ফ্রিতেই আর এস খতিয়ান ডাউনলোড করতে পারবেন তবে অন্যান্য খতিয়ান তেমন: বি এস খতিয়ান, সি এস খতিয়ান, বি আর এস খতিয়ান, এস এ খতিয়ান, পেটি খতিয়ান, দিয়ারা খতিয়ান, নামজারি খতিয়ান ডাউনলোড করার জন্য অবশ্যই ফি প্রদান করতে হবে।
এই স্টেপে সার্টিফাইড কপি ডাউনলোড করার জন্য কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে যেমন আপনার নাম ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার, জন্ম তারিখ, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা, ইত্যাদি।
এখানে দুটি অপশন পাবেন প্রথমদিকে একটি হচ্ছে অনলাইন কপি এবং আরেকটি হচ্ছে সার্টিফাইড কপি আপনি যদি এখান থেকে অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে চান তাহলে আপনাকে কোন এক্সট্রা ফ্রি প্রদান করতে হবে না।
তবে সার্টিফাইড কপি ডাউনলোড করার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ৫০ টাকা প্রদান করতে হবে। তাই আপনি কপি ডাউনলোড করার আগে প্রথমেই নির্বাচন করে নিবেন অনলাইন কপি ডাউনলোড করবেন নাকি সার্টিফিকেট কপি ডাউনলোড করবেন।
ধাপ ৬: খতিয়ান কপি ডাউনলোড করুন
উপরের ফর্মে ব্যক্তিগত সকল তথ্য এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করার পর আপনাকে এটি অনলাইন কপি অথবা সার্টিফাইড কপি দেওয়া হবে আপনি খুব সহজেই এটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আপনি যদি জমির রেকর্ড অনলাইন ডাউনলোড করেন তাহলে অনলাইন কপিতে উপরে লেখা থাকবে অনলাইন কপি সার্টিফাইড কপি হিসেবে ব্যবহারের যোগ্য নয়।
জমির রেকর্ড যাচাই বাংলাদেশ ২০২৩
অনেকেই রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমাদের নিবন্ধনগুলো পড়েন তারাও অনেকে জমির রেকর্ড যাচাই করতে চান আসলে আমরা বাংলাদেশ থেকে কিভাবে জমির রেকর্ড যাচাই করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করেছি পশ্চিমবঙ্গ থেকে জমির রেকর্ড দেখার জন্য আলাদা পদ্ধতি রয়েছে।
তাই আপনি যদি জমির রেকর্ড যাচাই বাংলাদেশ করতে চান তাহলে আমাদের ঋণ বন্ধনের দেখানো নিয়ম অনুযায়ী স্টেপ গুলো ফলো করতে পারলেই খুব সহজে অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনার জমির সকল রেকর্ড যাচাই করে ফেলতে পারবেন আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনের মাধ্যমে।
জমির রেকর্ড যাচাই app
অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই করার অনেকগুলো app রয়েছে তবে তবে জমির রেকর্ড যাচাই app গুলোর মধ্যে ভুমি সেবা অ্যাপসটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এই অ্যাপস এর মাধ্যমে খুব সহজে মালিকের নাম, দাগ নাম্বার অথবা খতিয়ান নাম্বার দিয়ে রেকর্ড যাচাই করা যায়।
আপনি যদি আপনার জমির তথ্য বা রেকর্ড যাচাই করতে চান তাহলে ভূমি সেবা অ্যাপসটি ডাউনলোড করতে পারেন এখানে খুব সহজে আপনি আপনার জমি সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করতে পারবেন।
রেকর্ড যাচাই সম্পর্কে (FAQ)
কিভাবে জমির রেকর্ড যাচাই কারা যায়?
অনলাইনে খুব সহজে জমির রেকর্ড যাচাই করতে eporcha.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনার খতিয়ান নম্বর ও খতিয়ান টাইপ নির্বাচন করে জেলা উপজেলা মৌজা সিলেট করে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে সাবমিট করলেই জমির রেকর্ড দেখতে পাবেন।
কিভাবে জমির মালিকানা যাচাই করা যায়?
যেকোনো জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য ওই যমির খতিয়ানটি নিয়ে সেটেলমেন্ট অফিসে গিয়ে খতিয়ানের ভলিয়াম দেখুন। আপনার খতিয়ান ভলিয়মের সাথে মিল থাকলে খতিয়ানটি সঠিক মালিকের নাম জানতে পারবেন। অনলাইনের মাধ্যমে eporcha.gov.bd সাইট থেকেও জমির মালিকানা যাচাই করা যায়।
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আমাদের আজকের নিবন্ধনে কিভাবে খুব সহজে খুব অল্প সময়ের মধ্যে হাতে থাকা স্মার্টফোনের মাধ্যমে যে কোন জমির রেকর্ড যাচাই করবেন সেই সম্পর্কে আলোচনা করেছি আশা করি আমাদের নিবন্ধনে দেখানোর নিয়ম ফলো করলে খুব সহজেই আপনি আপনার জমির রেকর্ড কার নামে রয়েছে সেটি দেখতে পারবেন।
জমির রেকর্ড দেখার সময় যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন সেটি আমাদের জানাতে পারেন আমরা যথাসম্ভব আপনার সমস্যাটি সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করব জমি সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয় আপনি চাইলে সেগুলো পড়তে পারেন আশা করি ভালো কিছু জানতে পারবেন এতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।